ক্রেতা ভ্যালু কি– যারা ব্যবসার সাথে জড়িত তারা নিশ্চয়ই এ সম্পর্কে অল্প স্বল্প জেনে থাকবেন। কেননা ব্যবসায় মূলত ক্রেতাকে ভ্যালু প্রদান করা হয়। আর কোন ব্যবসায়ী যদি দ্রুত সফল হতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই উত্তম ক্রেতা ভ্যালু সরবরাহ করার ওপর নির্ভর হতে হয়।
তবে যে বা যারা ক্রেতা ভ্যালু কি এ সম্পর্কে জানেন না, তারা আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। কেননা আজ আমরা ক্রেতা ভ্যালু কি, ক্রেতা ভ্যালু বলতে কী বোঝায়, ক্রেতা ভ্যালু প্রদান করার উপায় বা পদ্ধতি সমূহ সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক– ক্রেতা ভ্যালু কি এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত।
আরও পড়ুনঃ পৃথিবীর রাজধানীর নাম কি | পৃথিবীর সকল দেশের নাম ও রাজধানী
ক্রেতা ভ্যালু কি?
কোন পণ্য ক্রয় এবং ব্যবহারের ফলে যে সুযোগ-সুবিধা গুলো পাওয়া যায় পাশাপাশি পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারের জন্য যে সকল ব্যয়বহন করা হয় তার পার্থক্যই হল ক্রেতা ভ্যালু।
মানে প্রতিযোগীদের পণ্যের তুলনায় ক্রেতা কোন পণ্য থেকে কতটুকু সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে এবং তার জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে এই দুইয়ের পার্থক্য কে বলা হয় ক্রেতা ভ্যালু। ব্যবসায় মূলত সফল হওয়ার জন্য ক্রেতা ভ্যালুর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কেননা উত্তম ক্রেতা ভ্যালু সরবরাহ করার উপর নির্ভর করে ব্যবসায় সফলতা।
ক্রেতা ভ্যালু বলতে কী বোঝায়?
একজন গ্রাহক বা বক্তা কোন পণ্য কেনার সময় মূলত যেসকল সুবিধা প্রত্যাশা করে এবং তার সাথে ব্যবহারের পর প্রাপ্ত সুবিধার তুলনা করে ওই গ্রাহকের মধ্যে যে আনন্দ বা খারাপ লাগার অনুভূতি সৃষ্টি হয় তাকে সন্তুষ্টি এবং অসন্তুষ্টি বলা হয়। একজন ভক্তা যদি কোন পণ্য নির্ধারিত অ্যামাউন্ট দিয়ে কেনার পর ভালো কিছু ভোগ করার সুযোগ পায় তাহলে সেটা তার জন্য সন্তুষ্টির কারণ।
আর হিতে বিপরীত হলে সেটা হয়ে যায় অসন্তুষ্টির কারণ। আর ব্যবসা বা বিপণনে ক্রেতা ভ্যালু হচ্ছে কোন পণ্য ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে অর্জিত সুবিধা। আর ইতোমধ্যে আমরা ক্রেতা ভ্যালুর সংজ্ঞা হিসেবে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি–
কোন পণ্য ক্রয় বা ব্যবহারের ফলে যে সকল সুবিধা পাওয়া যায় এবং পণ্য ক্রয় ও ব্যবহার করার জন্য যে সকল ব্যয় বহন করা হয় তার পার্থক্যকে ক্রেতা ভ্যালু বলে। আপনি যদি এই বিষয়টা আরো সুস্পষ্ট ভাবে বুঝতে চান তাহলে উদাহরণস্বরূপ নিচের অংশটুকু পড়ুন।
মনে করুন- আপনার একটা সুতি কাপড়ের জামার প্রয়োজন। আর তাই সেটা কিনতে আপনি দোকানে গেলেন, টাকা খরচ করলেন শক্তি ব্যয় করলেন এবং আপনার পছন্দমত একটা সুতি কাপড়ের ড্রেস কিনে আনলেন। আর এর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে গরমে যাতে আপনি সুতি কাপড়ের জামা পরে একটু স্বস্তিতে থাকতে পারেন।
আর এইখানে মূলত লাস্ট এই অংশটুকুই ক্রেতা ভ্যালু। তাই এইসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ক্রেতা ভেলোর একটি সূত্র প্রদান করা হয়েছে। সূত্রটি নিজে প্রদান করা হলো।
ক্রেতা ভ্যালু সূত্র কি?
ক্রেতা ভ্যালুর সূত্র হচ্ছে:-
ক্রেতা ভ্যালু=ক্রেতার সুবিধাসমূহ-ক্রেতার ব্যয় সমূহ
আরও পড়ুনঃ চ্যাটজিপিটির কারণে উচ্চ ঝুঁকিতে পড়বে যেসকল পেশা
ক্রেতা সন্তুষ্টি বলতে কী বোঝায়?
সন্তুষ্টি শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। আর তাই এটা আমরা জানি সন্তুষ্টি শব্দটি মূলত ভালো লাগাকে ইঙ্গিত করে। এখানে ক্রেতা সন্তুষ্টি মানে হলো যে– কোনো ক্রেতা একটি পন্য বা সেবা কেনার পরিপূর্ণ বা সন্তুষ্ট অনুভব করেছে।
সন্তুষ্টির মূল কারণ হতে পারে পন্যের গুনগত মান, সেবা বা প্রোডাক্ট এর মূল্য, সময়ের সাথে প্রকাশিত প্রযুক্তি বা আপনি কীভাবে গ্রাহকের নেতৃত্ব এবং প্রস্তুতি করেন সেগুলোর নিয়ম ধারার সমূহ।
আর এটি মূলত প্রায়শই একটি স্থায়ী প্রক্রিয়া নয়, কারণ গ্রাহকের প্রাথমিক প্রত্যাশা সম্পাদন হয়ে থাকে এবং সেগুলি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। কেননা ক্রেতারা তাদের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রাথমিক প্রত্যাশা পূরণের জন্য নিয়মিত পর্যালোচনা করে এবং আপনার পন্য বা সেবার মান উন্নত করার চেষ্টা করতে হয়।
তবে এখানে মূলত ক্রেতা সন্তুষ্টি বলতে আপনার সেলকৃত প্রোডাক্ট এর গুণগত মান ভালো এবং দামের তুলনায় সুযোগ সুবিধার বিষয়গুলো তুলনা করে ক্রেতার মনে যে আনন্দের সচার ঘটেছে সেই সন্তুষ্টিকে ইঙ্গিত করছে। যেমন ধরুন– আপনি একটা দোকানে গেলেন পায়ে হেঁটে অথবা গাড়িতে চড়ে। পরবর্তীতে দোকানে টাকা দিয়ে একটা কলম কিনলেন।
আপনার উদ্দেশ্য আপনি যে কলমটি কিনছেন সেটা যেন ভালো লেখে এবং আপনি মসৃণ ভাবে লিখতে পারেন। এখন টাকা দিয়ে কেনার পরবর্তীতে যদি আপনার চাহিদা সম্পূর্ণভাবে মিটে যায় এবং আপনি প্রোডাক্টটি ব্যবহার করে আনন্দিত হন তাহলেই সেটা আপনার সন্তুষ্টির কারণ বলা চলে। আর ক্রেতা সন্তুষ্টি বলতে মূলত এটাকেই বোঝানো হয়।
কিভাবে ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি করা যায়?
ব্যবসায় সফল হতে হলে অবশ্যই ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি করা জানতে হবে। তাই এখন কথা হচ্ছে ক্রেতাদের জন্য ভ্যালু তৈরি করবেন কিভাবে? সত্যি বলতে তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে অবশ্যই আপনাকে ক্রেতাদের জন্য উত্তম ভালো সৃষ্টি করতেই হবে। এর জন্য আপনার সৃজনশীল মন মানসিকতার হতে হবে এবং সব সময় ক্রেতার প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা বা পণ্য সিলেক্ট করতে হবে।
একজন ক্রেতার অবশ্যই সাশ্রয়ী দামে যেকোনো পণ্য কেনা তে আকৃষ্ট হবে। তাই ক্রেতাদেরকে কম দামে সর্বোচ্চ মানের পণ্য ও সেবা প্রদানের সিস্টেমও বজায় রাখতে হবে আপনার। পাশাপাশি ভোক্তা বা ক্রেতার প্রয়োজন চিহ্নিত করে বাজার এনালাইসিস করে উদ্ভাবন করতে হবে নতুন নতুন মানের নতুন নতুন প্রোডাক্ট।
কেননা আপনি যদি ব্যবসায় সফল হতে চান তাহলে একটা বিষয়কে বা একটা পণ্যকে কেন্দ্র করে বসে থাকলে হবে না। আপনাকে মার্কেটিং পলিসি জানতে হবে এবং জানতে হবে কিভাবে ক্রেতাদেরকে আকৃষ্ট করা যায় এবং ক্রেতা ভ্যালু প্রদান করা যায়!
আরও পড়ুনঃ চ্যাটজিপিটির কারণে উচ্চ ঝুঁকিতে পড়বে যেসকল পেশা.
ক্রেতাভ্যালু প্রদান করার উপায়
আলোচনার এ পর্যায়ে আসুন জেনে নেই কিভাবে ক্রেতা ভ্যালু প্রদান করা সম্ভব। আশা করি আমাদের উল্লেখিত এ পয়েন্টগুলো আপনি analysis করার মাধ্যমে ক্রেতা ভ্যালু সৃষ্টি করতে পারবেন। যথা:-
- উপযুক্ত মূল্যে পণ্য সরবরাহ
- সর্বোচ্চ মানের সাশ্রয়ী দামের পণ্য সরবরাহ
- সর্বোচ্চ মানের সেবা সরবরাহ
এছাড়াও আপনি নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতি গুলো ক্রেতা ভ্যালু তৈরিতে কাজে লাগাতে পারেন। সেগুলো হচ্ছে:-
১. অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে: ক্রেতাদের বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েগুলির মধ্যে নেট ব্যাংকিং, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল মানি ট্রান্সফার, ইউপি ইত্যাদি রয়েছে। আপনি এই সুবিধাগুলির মাধ্যমে ক্রেতাদের অর্থ গ্রহণ করতে পারেন। প্রয়োজনে, আপনি অনলাইন ব্যবসায়ের জন্য বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ে সেটআপ করতে পারেন।
২. ব্যাংক ট্রান্সফার: ক্রেতাভ্যালু প্রদানের জন্য ক্রেতাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ট্রান্সফার করতে পারেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে, আপনি একটি নেটওয়ার্ক ব্যাংকিং বা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ক্রেতাদের ধার: কিছু দোকানদাররা অপরিষ্কার ক্রেতাদের ধারের পদ্ধতি অনুমোদন করে যা অপরিষ্কার সময়ে ক্রেতা দেয়ার জন্য অনুমতি দেয়। ধার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা হতে পারে।
৪. আপাতত ক্রেতার কাছে গিয়ে ক্যাশ পেমেন্ট: কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ক্রেতার কাছে যাওয়ার জন্য একটি অপশন হিসেবে ক্রেতাদের কাছে গিয়ে ক্যাশ পেমেন্ট নেওয়া দেয়।
৫. আপেল পেমেন্ট গেটওয়ে: কিছু দোকানদাররা আপেল পেমেন্ট গেটওয়ে সেটআপ করে যা ক্রেতাদের মোবাইল বা স্মার্টফোন ব্যবহার করে অর্থ প্রদান করতে পারে।
আশা করছি এই উপায় গুলি আপনার ক্রেতা ভ্যালু প্রদানের জন্য সুবিধা জনক হবে এবং আপনি ক্রেতাদেরকে খুব সহজেই আকৃষ্ট করতে পারবেন আপনার বাছাইকৃত প্রোডাক্ট কেনার জন্য।
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, ক্রেতা ভ্যালু কি আশা করি আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে আপনি সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারছেন। এমন সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়বস্তু নিয়ে জানতে আমাদেরকে ফলো করতে পারেন।
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী ও তার উত্তর, প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান, ক্যারিয়ার টিপস এবং চাকরির খবরসহ বিভিন্ন রকম প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি প্রকাশ করে থাকি। তো সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং পরবর্তী আপডেট পেতে নোটিফিকেশন বাটনটি ট্রাপ করবেন। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ.