বাসর রাত মানে কি, বাসর রাতে কি করতে হবে! আমরা সবাই অবগত– বিয়ে হলো পবিত্র বন্ধন। আর তাই ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক– নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্যই বিয়ে করা ফরজ। মূলত একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈধ সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম একমাত্র উপায় বিয়ে। তাই প্রত্যেকের জীবনে এই বিশেষ দিনটির আগমন ঘটে।
এজন্যই বাসর রাত কেন হয়, বাসর রাতে কি করতে হবে, বাসর রাতে বউকে কি উপহার দেওয়া যায় এমনকি বাসর রাতে কি কথা বলতে হয় এ ব্যাপারে জানতে আগ্রহী অনেকেই। তাই আজকের এই পোস্টে আমরা জানাতে চলেছি– বাসর রাত মানে কি, বাসর ঘর মানে কি এবং বাসর রাতে কি করতে হয় এ সম্পর্কে খুঁটিনাটি।
আরও পড়ুনঃ যোনিতে মাংস বৃদ্ধি হওয়ার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
বাসর রাত মানে কি?
বাসর রাত মানে হলো “বিবাহ পরবর্তীর প্রথম রাত্রি”। একজন নারী এবং একজন পুরুষ সে হোক পরিচিত অথবা অপরিচিত, মূলত দুইজনের চার হাত এক করে নতুন জীবনের উদ্দেশ্যে পথযাত্রা শুরু হওয়ার পরবর্তীতে যে প্রথম রাত আসে এবং তারা প্রথম একসঙ্গে রাত্রিযাপন করে তাকেই বাসর রাত বলে আখ্যায়িত করা হয়।
বাসর ঘর মানে কি?
ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি– বাসর রাত হলো বিবাহ পরবর্তী প্রথম রাত। অতএব এখানে বাসর শব্দের অর্থ- বর কনের বিবাহরাত যাপন। মূলত সকল বিধি নিষেধ মান্য করে একজন নারী এবং একজন পুরুষ একে অপরকে গ্রহণ করার পরবর্তীতে প্রথম যে রাত্রি যাপন করে সেটাই হচ্ছে বাসর রাত।
আর নতুন বরকনে যে ঘরে রাত্রি যাপন করে সেটাই হচ্ছে বাসর ঘর। অতএব বাসর ঘর মানে হলো- বিবাহ পরবর্তী প্রথম রাত যাপনের কক্ষ, যাকে বর কনের ফুলশয্যার কক্ষ বলেও সম্বোধন করা হয়। কেননা সচরাচর বাসর ঘর ফুল দিয়ে সাজানো হয়। আর তাই বাসর রাত কে ফুলশয্যার রাতও বলা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ শরীর দুর্বল হলে কি কি সমস্যা হয়
বাসর রাত কেন হয় | বাসর রাত কেন বলা হয়?
ইসলামসহ প্রত্যেকটি ধর্মেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা রয়েছে। আর তাইতো একজন নারী এবং একজন পুরুষ বৈধ সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বাসর রাত এমন একটি রাত, যে রাতে একজন নারী এবং একজন পুরুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয় এবং নিজেদের মধ্যে সর্বসত্তা বিনিময় করে।
যদি বাসর রাত কেন হয় এই প্রশ্নের এক কথায় উত্তর দিতে যাই, তাহলে বলা যায়– একজন নারী এবং একজন পুরুষের নতুন জীবন শুরু করার জন্য, তাদের মাঝে বোঝা পড়ার সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য এবং সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার জন্য বাসর রাত হয়। কেননা অপরিচিত অথবা পরিচিত একজন নারী এবং একজন পুরুষ স্বামী স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে তখনই থাকতে পারে যখন তারা পবিত্র বিবাহ বন্ধনে সকল নিয়ম ও শিষ্টাচার মেনে বিবাহ করে।
আর এই রাতে বাসর রাত বলার কারণ হলো– ওই রাতে সর্বপ্রথম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পরবর্তীতে স্বামী স্ত্রী একসঙ্গে রাত্রি যাপন করে, এমনকি একে অপরকে শপে দেয়। এখন আসুন ধারাবাহিকভাবে আরও জেনে নেই– বাসর রাতে কি করতে হবে, বাসর রাতে কিভাবে কথা বলতে হবে, বাসর রাতে কি কি করা উচিত এবং কি কি করা অনুচিত, বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান সহ প্রভৃতি।
বাসর রাতে কি করতে হবে
বাসর রাতে কি করতে হবে এটা মূলত সম্পূর্ণই ব্যক্তিগত বিষয়। কেননা এই বিষয়টি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বিষয়ের উপরই নির্ভরযোগ্য। তবে কিছুটা ধারণা দেওয়ার জন্য বলে রাখা ভালো— বাসর রাতে একজন স্বামী এবং স্ত্রী নিজেদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে তুলবে।
কেননা বাসর রাত একটা মিষ্টি রাত। যে রাতে উভয় উভয়ের সাথে কথা বলবে, দুজনের ভালো-মন্দ দুজন দুজনকে জানাবে, সারা জীবন একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকারবদ্ধ হবে এবং কিভাবে একজন আরেকজনের সুখে দুখে পাশে থাকবে এবং কিভাবে একে অন্যের সাথে শারীরিক মিলন করবে ইত্যাদি সকল ব্যক্তিগত ও নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে।
এক কথায়, দুজনের জীবনে ঘটে যাওয়া এবং দুজনের বোঝাপড়ার বিষয়টি একে অন্যের সাথে শেয়ার করার মাধ্যমে একে অন্যকে গভীর ভাবে জানবে। অতএব এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়– বাসর রাতে এমন কিছু করতে হবে যেটা ওই স্বামী এবং ওই স্ত্রীকে সারা জীবন সুখে রাখবে এবং নতুনত্বের কারণে যে সংকোচ থাকে তা চিরতরে দূর করবে।
আরও পড়ুনঃ লিভার রোগীর খাদ্য তালিকা
বাসর রাতে কি কি জানতে হবে
কিছু সাধারণ প্রশ্ন রয়েছে যেগুলো সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি। আর তাই জীবনসঙ্গী নির্বাচনের পর অবশ্যই একে অপরকে জানার জন্য এবং বোঝার জন্য বাসর রাতের সঙ্গীকে নিম্ন বর্ণিত প্রশ্নগুলো করতে পারেন। বলতে পারেন বাসর রাতে কি করতে হবে এ প্রশ্নের উত্তর এটি। যে উত্তরে আমরা আপনাদেরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয় প্রশ্ন আকারে তুলে ধরবো ।
প্রথমত: বাসর রাতে জীবনসঙ্গীকে জিজ্ঞাসা করবেন– আমাকে কেন বিয়ে করলেন?
অনেকেই রয়েছেন যারা পূর্ব পরিচিত থাকে, আবার এমন অনেকেই রয়েছেন যারা সদ্য পরিচিত। তবুও এক দেখাতেই বিয়ের মত সিদ্ধান্ত নেয় এবং একে অন্যকে নিয়ে সারা জীবন থাকার প্রতিজ্ঞা করে। আপনি যদি জীবন সঙ্গীর সাথে নিজের বন্ডিং মজবুত করতে চান তাহলে, জানতে চাইবেন সে কেন আপনাকে বিয়ে করল।
মূলত এই ধরনের প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ মানুষ বলে থাকেন– ভালোবাসি আর তাই সারাটা জীবন আপনার সঙ্গে কাটাতে চাই। তবে এটা তো কমন। আর তাই প্রত্যেকেই চাই এমন কিছু জানতে যেটা জীবনসঙ্গের প্রতি আলাদা একটা ভালোলাগা এবং সম্মানের জায়গা তৈরি করবে।
তাই জীবনসঙ্গীকে এই প্রশ্নটি করুন পাশাপাশি তার মনের কথা বুঝুন। কেননা লজ্জা কারণে আপনার সাথে সে মন খুলে প্রথমত কথা বলতে ইতস্তত বোধ করতে পারে।
দ্বিতীয়ত: বাসর রাতে জীবনসঙ্গীকে এটা জিজ্ঞাসা করুন– সে কেন আপনাকে ভালোবাসে!
এই প্রশ্নের উত্তর এবং জীবনসঙ্গীর বলা কথার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন তার জীবনে আপনার গুরুত্ব কতটুকু এবং সে আপনাকে কতটা ভালোবাসে। তবে হ্যাঁ, এমনটা মনে করার কোনই কারণ নেই যদি কেউ এই প্রশ্নের উত্তরে নীরবতা পালন করে তাহলে সে আপনাকে পছন্দ করে না অথবা ভালোবাসে না।
কেননা অনেকে লজ্জা এবং একটু আলাদা প্রশ্নের কারণে নীরবতা পালন করতে পারে। তবে একজন স্বামী এবং স্ত্রীর অবশ্যই উচিত এই রাতে মন খুলে কথা বলা এবং একে অপরকে বোঝার জন্য দুজন দুজনকে কোঅপারেট করা।
তৃতীয়ত: দুজন দুজনের সাথে ফিউচার প্ল্যান করুন এবং একে অন্য কে এটা জানান– বিয়ের পর ভালোবাসা বাঁচিয়ে রাখার জন্য কি কি করবেন?
“ভালোবাসা” সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার একটি অন্যতম বিশেষ অনুভূতি। যে সম্পর্কে ভালোবাসার নেই সে সম্পর্কে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব। আর তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে এমন কিছু কথা বলুন যেটা দুজন দুজনের ভবিষ্যত জীবনে কাজে আসবে এবং যাই হয়ে যাক না কেন বেঁচে থাকবে ভালোবাসা।
চতুর্থত: বাসর রাতে জীবনসঙ্গের কাছ থেকে জানতে পারেন আপনার জন্য জীবনের আপস করতে প্রস্তুত কিনা!
আমরা প্রত্যেকেই আলাদা, কেননা আমাদের প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা ব্যক্তিত্ব রয়েছে। আর তাই যেকোনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য একজনকে আপোস করতেই হবে। তবে এমনটা নয় যে সব সময় একজনই শুধু আপোষ করবে। এক্ষেত্রে উভয়েরই উভয়কে কো অপারেট করতে হবে।
তবে এ প্রশ্নটি করার মাধ্যমে বা এই প্রশ্নটি নিয়ে আলোচনা করার মাধ্যমে দুজন দুজনকে বেশ ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন। জানতে পারবেন নিজেদের ভালোলাগা খারাপ লাগা এবং দুর্বলতা সম্পর্কে।
পঞ্চমত: জীবনসঙ্গের সাথে সুখ-দুঃখের মুহূর্ত এবং সন্তানদের জন্য ত্যাগ স্বীকার সম্পর্কে আলোচনা করুন।
অনেকেরই মনে হতে পারে বিয়ের প্রথম রাতে এই প্রশ্নগুলো করা বা এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা ভুল। তবে সত্যি এটাই যেহেতু আপনি একে অন্যকে জানার জন্য এবং সারা জীবন একসঙ্গে থাকার জন্য বিয়ে করেছেন তাই অবশ্যই আপনাদের মধ্যে বোঝাপড়া এবং সারা জীবন সুখে থাকার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বিয়ের প্রথম রাতেই আলোচনা করা জরুরী।
আমরা যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছি এটা শুধুমাত্র আমাদের দিক বিবেচনা করে। এর বাইরে আপনি যদি তাকে জানার এবং বোঝার জন্য অথবা নিজেদের মাঝে সম্পর্ক মজবুত ও শক্ত করার জন্য অন্য কোন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসাবাদ থেকে থাকে তাহলে করতেই পারেন। তবে হ্যাঁ, বাসর রাতে এমন কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো একদমই করা উচিত নয়। যা আমরা নিচের পয়েন্টে আলোচনা করছি।
আরও পড়ুনঃ শরীর শুকিয়ে যাওয়ার কারণ
বাসর রাতে কি কি করা নিষিদ্ধ
অনেকে ই প্রশ্ন করেন– শারীরিক সম্পর্ক কি বাসর রাতে আবশ্যক? আর এমন কি কোন কাজ রয়েছে যেটা বাসর রাতে করা একদমই নিষিদ্ধ! মূলত আপনার প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে– না, বাসর রাতে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা আবশ্যক নয়। এমনকি নবদম্পতির বাসর রাতে সেক্স করা অনুচিত বলে জানিয়েছেন যৌন পণ্ডিত গণেরা।
কেননা, নতুন নতুন অবশ্যই এই কাজটি করা স্বভাব হয় না। একজন নারী এবং একজন পুরুষের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের আগে ব্যক্তিগত এবং বিশেষ কিছু বোঝাপড়ার প্রয়োজন পরে। তাই এই রাতে শারীরিক মিলন করা আবশ্যক নয়। তবে যদি আপনাদের প্রেমের বিয়ে হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আলাদা ব্যাপার, মূলত এটা আপনাদের উপরেই নির্ভর করছে।
আর হ্যাঁ, অনেকের রয়েছেন যারা নিজেদের কন্ট্রোল করতে পারেন না। মনে রাখবেন স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া অর্থাৎ তার সহমত না থাকলে বাসর রাতে প্রথম দিন শারীরিক মিলন করতে না যাওয়াটাই ভালো। আর এটাতেই নিষিদ্ধ কাজ হিসেবে ধরতে পারেন।
আর তাছাড়াও, বিয়ে নিয়ে নারী-পুরুষ উভয়ে ই বেশ ধকলের মধ্যে থাকে। প্রায় এক সপ্তাহ অথবা তার থেকে বেশি একটা না বেশ কয়েকটা দিন বিভিন্নভাবে পরিশ্রম করতে হয় উভয়কেই। আর তাই সারাদিন পরিশ্রমের পর রাত জেগে থাকাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে– উভয়কে জানার জন্য এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলা যেটা দুজনের জন্যই জরুরী।
বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামের বিধান
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বাসর রাত নিয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট বিধি-বিধান রয়েছে। দেখুন বিয়ের বিশেষ একটি অংশ হচ্ছে বাসর রাত এটা আমরা জেনেছি। যে রাত সাধারণত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া প্রতিটি যুগলের জীবনের কাঙ্খিত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। একজন নারী এবং একজন পুরুষের বিয়ে হওয়ার প্রথম রাতই হচ্ছে বাসর রাত।
আপনি যদি মুসলিম ধর্মাবলম্বীর হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ইসলামে উল্লেখিত বাসর রাতের কিছু বিধান মেনে চলতে হবে, যেগুলো আপনার ভবিষ্যৎ জীবনকে আরো উজ্জ্বলময় করে তুলবে। যথা –
- বিয়ের নিয়ত করা
- একসঙ্গে সালাত আদায় করা
- স্ত্রীর মাথায় ডান হাত রেখে দোয়া পড়া
- নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা
- ঋতুবতী স্ত্রীর সঙ্গে যা কিছু অনুমতি রয়েছে সেগুলো করা এবং যেগুলোর অনুমতি নেই সেগুলো পরিহার করা
- মিলনের সময় দোয়া পড়া
- মিলনের পর অজু অথবা গোসল করা
- স্বামী-স্ত্রীর গোপনীয়তা উভয়েরই গোপন রাখা
- উলঙ্গ হয়ে সঙ্গম না করা
এক কথায়– একজন স্বামী এবং একজন স্ত্রীর উভয়েরই বাসর রাতে বিয়ের নিয়ত হিসেবে এমন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেটা তাদেরকে সুখে রাখবে এবং সকল প্রকার হারাম কাজ থেকে বিরত রাখবে। সেই সাথে যেহেতু নামাজের কোন বিকল্প নেই তাই ওই রাতে নামাজ পড়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাছাড়াও যেহেতু আপনি প্রথম কোন নারী এবং আপনার স্ত্রীর সংস্পর্শে যাচ্ছেন তাই অবশ্যই স্ত্রীর মাথায় সর্বপ্রথম ডান হাতে রাখা এবং আল্লাহর দরবারে দোয়া করা– হে আল্লাহ পাক আপনার কাছে আমার স্ত্রীর এবং তার স্বভাবের কল্যাণ প্রার্থনা করছি এবং তার ও তার স্বভাবের অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
এমনকি নিষিদ্ধ কাজ থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে আপনাকে। কেননা অনেকেই রয়েছেন যারা নিজেদেরকে কন্ট্রোল করতে না পেরে নারীদেরকে ঋতুস্রাব কালীন সময়েও সঙ্গম করে ফেলেন, যেটা একদমই অনুচিত। আর তাই সব কিছুর বৈধতা বিবেচনা করে করায় ভালো।
আর আমরা সবাই জানি– ইসলামী বিধানে স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমের সময় কিছু বিশেষ দোয়া করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি অজু ও গোসল করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও যেহেতু স্ত্রী এবং স্বামী উভয়ের মাঝে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং একদমই আলাদা তাই স্ত্রীর সঙ্গে কাটানো সময়ের গোপন তথ্য প্রকাশ না করাই সর্বোত্তম।
বাসর রাতে স্বামীকে খুশি করার উপায়
বাসর রাতে স্বামীকে খুশি করার অন্যতম উপায় হচ্ছে মাধুর্যপূর্ণ আচরণ করা। লজ্জাশীলতা নারীদের সৌন্দর্য। আর লজ্জাশীল নারীকে প্রত্যেক পুরুষই পছন্দ করে। তাই অবশ্যই বাসর রাতে স্বামীকে খুশি করার জন্য মাধুর্যপূর্ণ আচরণ করবেন এবং স্পেশাল মোমেন্ট তৈরি করবেন। এটা মূলত আপনার ব্যক্তিগত চিন্তা ধারা এবং ব্যক্তিগত বিষয়ের উপর নির্ভর করছে। তবে সচরাচর স্বামীকে বিছানায় খুশি করার উপায় হলো –
- স্বামীর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকা
- নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা
- তাকে ঠিকঠাক বোঝার চেষ্টা করা এবং প্রায় সকল কাজে সহযোগিতা করা
- স্বামীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা বিশেষ করে তার সম্পর্কে
- তার প্রশংসা করা
আর যেহেতু আপনি নতুন স্ত্রী, তাই সে ক্ষেত্রে স্বামীকে বাসর রাতে খুশি করার জন্য নিম্ন বর্ণিত কাজগুলো করুন। যথা –
- স্বামীর সাথে দুই রাকাত নামাজ আদায় করুন
- তার সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করুন এবং তার দেওয়া যে কোনো গিফট খুশি মনে গ্রহণ করুন
- স্বামীর ভালোলাগা ও খারাপ লাগা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানুন
- যৌন মিলনের সময় এমনভাবে সহবাস করুন যেন এটা মনে হয় সে আপনার জীবনের প্রথম পুরুষ।
আরও পড়ুনঃ ভালোবাসা কি | ভালোবাসা কিভাবে হয় | ভালোবাসার বৈজ্ঞানিক সূত্র
বাসর রাতে স্ত্রীকে খুশি করার উপায় | বাসর রাতে বউকে কি উপহার দেওয়া যায়
একইভাবে বাসর রাতে স্ত্রীকে খুশি করার উপায় সম্পর্কেও জানার প্রয়োজন পড়ে। আর তাই বাসর রাতে বউকে কি উপহার দেওয়া যায়, বাসর রাতে স্ত্রীকে খুশি করার উপায় কি এ সম্পর্কেও জানতে ইচ্ছুক অনেকেই।
বাসর রাতে অর্থাৎ প্রথম রাতে স্ত্রীকে কি উপহার দেওয়া যায় এই উত্তরে বলব– আপনি আপনার স্ত্রীর পছন্দের জামাকাপড় কিনে দিতে পারেন সেই রাতে। আর বউকে উপহার দেওয়ার সুবিধাটা হচ্ছে কম বাজেট থেকে বেশি বাজেট সবেতেই মেয়েদের জন্য নানারকম জিনিস পাওয়া যায়।
এমন কিছু জিনিস উপহার দিন যেটা আপনার স্ত্রী ভালবাসবে। যদি সে বই পড়তে ভালোবাসে তাহলে এমন একটি বই দিন যেটা তার খুবই পছন্দ হবে, এমনকি তার পছন্দের তালিকায় অন্য কিছু থাকলে তাকে সেটাই উপহার দিন। আর হ্যাঁ, মেয়েরা সাধারণত অনেকটাই নরম মনের হয়ে থাকে। আর তারা সবসময়ই একটু আলাদাভাবে চিন্তা করে।
আর তাই বাসর রাতে বউকে উপহার দিলেই যে সে খুশি হবে এমনটা নয়। এমনও হতে পারে আপনার স্ত্রী আপনার কাছে গিফট নয় বরং আপনাকে চাইছে এবং আপনার স্পেশাল হয়ে সারা জীবন থাকতে চাই এবং আপনিও তাকে রাখতে চান এমন কিছুই জানতে ইচ্ছে হচ্ছে।
সব সময় চেষ্টা করুন স্ত্রীকে খুশি রাখবার এবং সে কি চায় তার কি পছন্দ এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে এমন কিছু দেওয়ার। সেটা হতে পারে টাকা দিয়ে কেনা কোন গিফট অথবা মুখ থেকে বেরিয়ে আসা কিছু সুন্দর ও মাধুর্যপূর্ণ শব্দ।
বাসর রাতে কি করলে বাচ্চা হয়
স্বামী স্ত্রীর মিলনের মাধ্যমে বাচ্চা হয় এটা এডাল্ট বয়সের কারোরই অজানা নয়। তাই বাসর রাতে কি করলে বাচ্চা হয় এ প্রশ্নটি করা একদমই অযৌক্তিক। তবে সচরাচর কেউ বিয়ের প্রথম রাতে বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় না। তবে আপনি যদি এ বিষয়ে জ্ঞানলাভ করতে চান তাহলে doctlab.com ওয়েবসাইটের স্বাস্থ্য কথা ক্যাটাগরির আজকের গুলো পড়তে পারেন।
তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বাসর রাত মানে কি, বাসর রাতে কি করতে হবে এ সম্পর্কিত আলোচনার ইতি টানছি আজ এখানেই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।
আরও দেখুনঃ