জাতীয় শিক্ষক দিবস, আগমনী বার্তা নিয়ে হাজির হতে চলেছে। আর তাই অডিয়েন্সদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে আজ আমরা আজকের পোস্টে জাতীয় শিক্ষক দিবস সম্পর্কে বিশেষ কিছু ইনফরমেশন সংযুক্ত করব। হ্যালো এভরিওয়ান আসসালামু আলাইকুম, আপনি যদি জাতীয় শিক্ষক দিবস সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয় জানতে চান এবং জাতীয় শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য এবং কিছু উক্তি সম্পর্কে অবগত হতে চান, তাহলে আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। সেই সাথে আরও জানতে এখনই পড়ে ফেলতে পারেন– ফেব্রুয়ারি মাসের ডে সমূহ, গুরুত্বপূর্ণ দিবস সমূহ সম্পর্কিত আরো কিছু পোস্ট
আরও দেখুনঃ ২০২৪ সালের রমজান কত তারিখ.
জাতীয় শিক্ষক দিবস
জাতীয় শিক্ষক দিবস বাংলাদেশে সাধারণত পালিত হয় ১৯ জানুয়ারি। অতএব এই হিসাবে আমাদের হাতে সময় রয়েছে আর মাত্র তিন দিন। অতঃপর পালিত হবে জাতীয় শিক্ষক দিবস। জানা গিয়েছে–২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশে শিক্ষক সমাজকে একটি অনন্য মর্যাদায় অভিভূত করতে ১৯ জানুয়ারি পালিত হয় এই বিশেষ দিবসটি।
তবে হ্যাঁ, অনেকেরই প্রশ্ন জাতীয় শিক্ষক দিবস আসলে কত তারিখে সংঘটিত হয়–১৯শে জানুয়ারি নাকি ৫ ই অক্টোবর! এর জন্য আপনাকে জাতীয় শিক্ষক দিবস সম্পর্কে একটি ব্যাখ্যা জানতে হবে। তো বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য এ পর্যায়ে উল্লেখ করছি কিছু ইনফরমেশন– আমাদের দেশে ২০০৩ সালে ঠিক জানুয়ারির ১৯ তারিখে বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজকে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার অঙ্গীকার হিসেবে সরকার জাতীয় শিক্ষক দিবস বলে এই তারিখে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কিন্তু পরবর্তীতে জাতীয় শিক্ষক দিবসের দিন পরিবর্তিত হয় আর সেই দিনেই বিশ্ব শিক্ষক দিবস মোট ১০০টি দেশে উদযাপিত হয়ে থাকে। তারিখ টি হচ্ছে ৫ অক্টোবর।
শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য
শিক্ষক হলেন আদর্শ জাতি গঠনের কারিগর। শিক্ষার আলো জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে একজন শিক্ষক। আমরা সবাই জানি, ওই জাতি সবচেয়ে বেশি উন্নত যে জাতির জনগণ সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত। যেহেতু শিক্ষক তাদের গুণাবলী, শিক্ষা, জ্ঞানের পরিধি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেন এবং তাদেরকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকারবদ্ধ হন তাই তাদের অবদান অতুলনীয়।
আর যেহেতু জাতীয় শিক্ষক দিবস উদযাপনের অন্যতম লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে — শিক্ষকদের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা অতএব এই দিবসের তাৎপর্য অনেক বেশি গভীর। মূলত শিক্ষকদের সম্মান জানাতে, তাদের অবদানের পুরস্কার হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই দিনটি উদযাপন করছে। যে দিনের মাধ্যমে একজন শিক্ষক নিজের সম্মান এবং নিজের মর্যাদাকে একটু আলাদাভাবে অনুভব করতে সক্ষম হচ্ছেন .
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কিছু কথা
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে যে বিশেষ একটি দিন বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়, এটা যেমন শিক্ষকদের ভালোলাগার একটি বিষয় ঠিক একইভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অন্যতম সুযোগ। কেননা শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষকরা যেমন তাদের মনের কিছু কথা আলাদা ভাবে ব্যক্ত করতে পারে, ঠিক একইভাবে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে এমন অনেক কিছুই বলার সুযোগ পেয়ে থাকে যেটা তারা বলতে চায়।
শিক্ষক যেমন আমাদের গুরু আমাদের জ্ঞান দান করেন, ঠিক একইভাবে শিক্ষক হলেন আমাদের সবচেয়ে কাছের এবং সবচেয়ে জ্ঞানী বন্ধু। যাদের সান্নিধ্যে থেকে আমরা সর্বদা মানুষের মত মানুষ হবার বৈশিষ্ট্য ধারণ করি এবং জীবনের বাধা ও ভ্রান্ত ধারণাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা পাই। বিশেষ এই দিনটি উদযাপিত হওয়ার কারণে শিক্ষকরা যেমন তাদের মর্যাদা লাভ করেন, ঠিক একইভাবে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষকদের কে মর্যাদা জানাতে পেরে অনেক বেশি উৎফুল্ল থাকে। আজকের এই পোস্টে আমরা শিক্ষক দিবস সম্পর্কে কিছু উক্তি এবং শিক্ষক দিবস নিয়ে শিক্ষকের বক্তব্য ও ছাত্রদের বক্তব্য হিসেবে কিছু নমুনা সংযুক্ত করব।
আরও দেখুন- রোজ ডে স্ট্যাটাস | ৫০+ রোজ ডে শুভেচ্ছা, এসএমএস, কবিতা পিকচার
শিক্ষক দিবস সম্পর্কে দুটি বাক্য
শিক্ষক দিবস নিয়ে আমার মতে সবচেয়ে সুন্দর দুটি বাক্য হচ্ছে–
✓ শিক্ষক দিবস হচ্ছে শোকাচার, গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ মর্যাদা পূর্ণ একদিন যে দিনটি আমাদের শিক্ষকদের কর্তব্য এবং দায়িত্ববোধের বিষয়টি মনে করিয়ে দেয় নতুন করে।
✓শিক্ষক দিবস হচ্ছে সেই সুযোগ বা সেই অনুপ্রেরণামূলক দিন যে দিনে আমরা আমাদের প্রিয় শিক্ষকদের কাছে শ্রদ্ধাঞ্জলি সম্মান এবং ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি।
শিক্ষক দিবসের শিক্ষকদের বক্তব্য
নমুনা-১
“সকল প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীগণ, আমি আজ শিক্ষক দিবসে তোমাদের সঙ্গে এই মুক্তাক শেয়ার করতে এসেছি। শিক্ষা একটি সমৃদ্ধির এবং বিকাশের মাধ্যম, এটি আমাদের সমাজকে আরও উচ্চ দরজায় উঠাতে সাহায্য করে। আমরা শিক্ষকরা আমাদের প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দীপনা দেয়ার জন্য এবং তাদের জীবনে একটি সঠিক দিকে পথনির্দেশন করার জন্য প্রতিবছর অতীতে এসে থাকি।
আমরা জানি, শিক্ষা একটি দীর্ঘসময় প্রক্রিয়া, এটি সকাল হতে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লেখা শেখা শুরু হয় এবং এটি আমাদের পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হয়। তবে, এই সময়ের মধ্যে আমাদের কাছে অসংখ্য সম্ভারণা এবং উত্সাহ বিতরণ করেছে। এই পথে চলার সময়ে আমাদের একসাথে থাকা, মিলনের এবং পরামর্শের মাধ্যমে আমরা আপনাদের জীবনের সবচেয়ে মৌল্যবান সময়গুলির সাথে থাকতে চেয়েছি।
আমি আপনাদের কাছে একটি পৌরাণিক বাণী শেখাতে চাই – ‘শিক্ষা আলো আসায় অন্ধকারকে দূর করে।’ এই বাণী আমাদের শিক্ষার দরজার পেছনে মুখে হোক এবং আমরা আমাদের জীবনে আলোর বাতি হিসেবে কাজ করতে পারি। আমরা তোমাদের মধ্যে আগামী প্রজন্মের নেতৃত্বকে তৈরি করতে চাই, যারা এই পৃথিবীকে আরও সমৃদ্ধিশীল এবং বিনম্র করতে সাহায্য করতে পারবে।
তোমাদের আগামীর পথে সফলতা এবং সুখের সাথে চলা হোক। আমি তোমাদের সবার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি। শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের প্রতি আমার শ্রদ্ধাশীল শ্রদ্ধার্ঘ্য। ধন্যবাদ এবং সবশেষে আসসালামুআলাইকুম।
শিক্ষক দিবসে ছাত্রদের বক্তব্য | শিক্ষক দিবসের ছোট বক্তৃতা
নমুনা-১
আসসালামুআলাইকুম, শিক্ষক দিবস একটি মহত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যা ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে শিক্ষকের গুরুত্ব সম্পর্কে চিন্তা করতে একটি অদৃশ্য প্রতিষ্ঠান। শিক্ষকদের উপকারে সবাই বৃদ্ধি করে, অতএব এই দিনটি আমাদের জন্য একটি মৌলিক সমর্পণ অর্পণের অভিবাদন হতে পারে।
ছাত্রবৃন্দের দৃষ্টিতে, শিক্ষক সমাজের এক প্রধান স্রোত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যিনি শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান ও ওপেণ দিচ্ছেন। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, যে তারা আমাদের ভবিষ্যতের নির্মাতা। এই দিনে, আমরা তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীলতা প্রদর্শন করি এবং তাদের কাছে আমাদের আবেগ ও প্রবৃদ্ধির ধন্যবাদ প্রকাশ করি।
শিক্ষক দিবসে আমরা মন্নাই হতাশ না হওয়া, বরং এই উপলক্ষে তাদের কাছে আমাদের শ্রদ্ধাশীলতা ও সম্মান প্রদান করি।
নমুনা-২
আসসালামুআলাইকুম, সকল শিক্ষকবৃন্দ, আমরা আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। আপনাদের অমূল্য শিক্ষা আমাদের জীবনে এক অমূল্য সম্পত্তি। আপনাদের সৃষ্টি করা এই মাধ্যমে আমরা জ্ঞান, সমর্পণ, এবং সম্মানের প্রতি আবদ্ধ হচ্ছি। আপনাদের অশোভনতা ও নেতৃত্বের মাধ্যমে আমরা নতুন দিকে প্রবৃদ্ধি করছি।
শিক্ষক দিবসে আমরা চিরকাল মনে রাখবো আপনাদের সব শিক্ষা, সৃষ্টি, এবং উৎসাহের জন্য আমাদের কৃতজ্ঞ। আপনারা আমাদের জীবনে এক বিশেষ অংশ রয়েছেন, যা আমরা কখনোই ভুলবো না। ধন্যবাদ এবং শিক্ষক দিবসে আপনাদের অবদানের জন্য শ্রদ্ধাশীল।
আরও দেখুন- বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা
শিক্ষক দিবসের সেরা বক্তব্য
সুপ্রভাত এবং আসসালামুআলাইকুম , প্রধান শিক্ষক মহাশয়, আজকের প্রধান অতিথি মহাশয়, সকল আমরা সহকর্মীবৃন্দ এবং স্নেহের ছাত্র-ছাত্রীরা সকলকে জানাই শিক্ষক দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা । আজ ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস এই দিনটি একজন ছাত্র ও শিক্ষক উভয়ের কাছেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন ।
এই দিনটি একজন রাজনীতিবিদ, বিচক্ষণ দার্শনিক এবং সর্বোপরি একজন মহান শিক্ষক এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয় । তিনি হলেন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান । ১৮৮৮ সালে আজকের দিনেই তামিলনাড়ুর এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র । জীবনের কোনো পরীক্ষাতেই প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হননি । ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাস খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন । এরপর তিনি তাঁর চাকরি জীবন শুরু করেন মাইসরো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা দিয়ে ।
তারপর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন । ১৯৩১ সালে ইংরেজরা তাকে নাইটহুড উপাধিতে সম্মানিত করেছিলেন । এই শিক্ষক দিবস শুরু হওয়ার পেছনে একটি ছোট্ট ঘটনা আছে । তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার কারণে, তাঁর অসংখ্য গুণমুগ্ধ ছাত্র ও ছাত্রী ছিলেন। ১৯৬২ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ওনার শিক্ষার্থীরা ও বন্ধুরা ৫ই সেপ্টেম্বর তাঁর
জন্মদিন পালন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাতে তিনি সম্মতি প্রদান না করে বলেন তাঁর জম্মদিনের পরিবর্তে, ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয় তাহলে তিনি বেশি খুশি হবেন । এই পরিপেক্ষিতে ১৯৬২ সালের পর থেকে ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটি ভারতবর্ষে শিক্ষক দিবস হিসেবে উদযাপন করা শুরু হয় । ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন বলেছেন যে, পুরো পৃথিবী একটি স্কুল, যেখানে আমরা নতুন বা অন্য কিছু শিখি । আমাদের শিক্ষকরা শুধু আমাদের শেখান না, আমাদের ভালো মন্দের পার্থক্য বুঝতেও সাহায্য করেন । তাঁর এই বক্তব্য নির্দেশ করে যে আমাদের জীবনে শিক্ষক থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ।
শিক্ষক দিবস অনুচ্ছেদ রচনা
শিক্ষক দিবস বাঙালি শিক্ষা সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, যা প্রতি বছর ৫ অক্টোবরে পালন করা হয়। এই দিনটি শিক্ষকদের যেমন শ্রদ্ধার্ঘ্যে অনুষ্ঠান করা হয়, তেমনি এটি ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা শ্রদ্ধার্ঘ্যে পালন করা হয়।
শিক্ষক দিবসে আমরা আমাদের শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে পারি এবং তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রকাশ করতে পারি। শিক্ষকরা একটি সমাজের প্রতি দায়িত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে, শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চরিত্র উন্নত করে তুলতে সাহায্য করে।
এই দিনে বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজে শিক্ষকদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা আপনাদের শিক্ষকদের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ায় তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে পারে এবং তাদের দ্বারা দেওয়া শিক্ষায় কোনো ঋণ পরিশোধ করতে পারে।
আমাদের জীবনে শিক্ষক হিসেবে দেওয়া একটি উপহার রয়েছে যা অমূল্য। এই শিক্ষক দিবসে আমরা তাদের জন্য কিছু করে তাদের প্রতি আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং সমর্থন প্রদান করতে পারি।
শিক্ষক দিবস আমাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার একটি সুযোগ, তাদের উপকারিতা এবং দান প্রতি আমাদের আবেগ জাগানোর একটি মাধ্যম।
শিক্ষক দিবস রচনা
ভূমিকা- শিক্ষক ছাড়া সবার জীবন এলোমেলো। শিক্ষক আর শিক্ষিকারা আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে। এমন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না যার কোন শিক্ষক নেই। আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেক দিন কিছু না কিছু শিখছি- ঘরে, বাইরে, এবং প্রকৃতি থেকে। আর তাই তো শিক্ষক দিবস প্রতি বছর ৫ অক্টোবরে পূর্বাভাসে পালিত হয়। এই দিনটি একটি শ্রদ্ধার্ঘ্য সমর্পণ দিবস, যা শিক্ষকদের কাজের মূল্যায়ন এবং তাদের যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষার মাধ্যমে সমাজে একটি গভীর প্রভাব বোঝানোর জন্য প্রতিবছরে চিরকালের আনন্দন ও শ্রদ্ধার অভিবাদন।
শিক্ষক দিবস- শিক্ষকরা একটি সমাজের ভিত্তি গড়ে তোলায় অমূল্য যোগদান রেখে থাকেন। তাদের প্রশিক্ষণ, মার্গদর্শন, এবং শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্রদের চেতনা ও আত্মনির্ভরণ বৃদ্ধি করে। শিক্ষক হিসেবে তাদের দায়িত্ব অত্যন্ত গম্ভীর এবং দায়িত্বশীল হোনে।
একজন শিক্ষক তাদের ছাত্রদের জীবনে একটি অনুভূতি দেয়ার দায়িত্ব পালন করে যা শৈক্ষিক এবং চরিত্রিক উন্নতি সহজ করে। শিক্ষক হিসেবে তারা শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ছাত্রদের আলোকিত একটি পথে প্রেরণা দেয়, যা তাদের ভবিষ্যতে উজ্জ্বল করে।
শিক্ষক দিবসে এমন অবসরে, আমরা মনোনিবেশে এসে শিক্ষকদের যোগদান, প্রতিবাদ, এবং অদম্যতায় তাদের কাজের জন্য আবারো আবারো ধন্যবাদ জানাতে পারি। তাদের সবুজ বৃষ্টির মতো উদ্বেগ ও আশীর্বাদ প্রদানের সময়।
আমাদের শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের সতর্ক হওয়া এবং তাদের উপর প্রভাব ফেলার জন্য একটি শিক্ষামূলক পরিবর্তন হতে হবে। শিক্ষকরা একটি সম্পূর্ণ সমাজের উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছেন, এবং তাদের যোগদান ও সঙ্গীতের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ কাজে লাগাচ্ছে।
শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের জন্য আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো একটি ছোট্ট প্রয়াস, তাদের যোগদান ও প্রশিক্ষণের জন্য একটি অমূল্য উপহার। তাদের সাথে একটি আভাস করাতে যে আমরা তাদের কাজের মূল্যায়ন করি এবং তাদের সাথে একটি প্রতিবদ্ধ উদাহরণ দেখাতে আগ্রহী।
সমাপ্তে, শিক্ষক দিবসে আমাদের প্রশ্ন এবং ধন্যবাদের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রতি আমাদের আদর ও গৌরব প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি তাদের প্রশিক্ষণে উন্নতি এবং মোতিবাদ দেখানোর একটি সুযোগ এবং আমাদের সমাজে শিক্ষকদের মহত্ত্ব ও দায়িত্বের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জানানোর একটি মাধ্যম।
শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য– প্রতিটি মানুষের জীবনে বিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। আর এই বিদ্যালয়ের ভীত শিক্ষকদেরকে আঁকড়ে মজবুত হয়ে থাকে। নানান রকমের ছাত্র ছাত্রীকে শিক্ষকেরা সঠিক পথে চালনা করেন। শুধুই কি পুঁথিগত শিক্ষা দেন এই শিক্ষকেরা? না, শিক্ষকেরা জীবনে বড় হয়ে ওঠার পথ দেখান, ভদ্রতা, শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধ এর শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
আমাদের প্রত্যেকেরই শৈশব বেলা ও যৌবন জীবনের বেশীরভাগ সময় কাটে বিদ্যালয়ে। এই জন্য বিদ্যালয় হয়ে ওঠে দ্বিতীয় ঘর। আর সেই দ্বিতীয় ঘরের গার্জেন হলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।
বিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবস উদযাপন- প্রতি বছর প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবস আনন্দের সাথে উদযাপন হয়ে থাকে। এই দিন বিদ্যালয়ে এক উৎসবের হিড়িক পড়ে যায়। তবে এই হিড়িক কিন্তু অন্যন্য উৎসবের চেয়ে আলাদা।
এ যেন জলজ্যান্ত সরস্বতী পুজার উৎসব। শিক্ষক শিক্ষিকারাই হলেন আমার কাছে আসল ঈশ্বর, যাঁদের অবদান আমি কোনোদিনই ভুলবো না।
আর শিক্ষার সাথে জড়িয়ে থাকে কলম, ডাইরি, বই, এইসব জিনিষগুলো। আমরা প্রতি বছর শিক্ষকদের এইসব গিফট করে থাকি। আর উনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ জানাই গ্রিটিংস কার্ডের মাধ্যমে।
এই দিন সত্যি বলতে কি পড়াশুনো এর চেয়ে বেশী শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে গল্প করতে ভাল লাগে, তাঁদের জীবন কাহিনী শুনতে ভাল লাগে, ভাল লাগে তাঁদের ছাত্র জীবনের গল্প শুনতে।
শিক্ষকদের প্রতি ভয় অন্য দিন থাকলেও এই দিন আর সেইসব থাকে না। এই দিন শুধুই ভাল লাগার আমেজ। আমরা সবাই একত্রে শিক্ষকদের প্রনাম করতে আর গিফট দিতে যাই। শিক্ষকেরা মিষ্টির ব্যবস্থা করেন।
প্রতিটি ক্লাসেই যখন শিক্ষকেরা ঢোকেন, আমরা আবদার করতে থাকি এই বলে স্যার যেন আজকের দিনটা না পড়ান। প্রতিটি ক্লাসে পড়াশোনা থেকে ছুটি নিয়ে থাকি এই দিনটা। এই প্রসঙ্গে এক অন্য রকম শিক্ষকের কথা মনে পড়ে গেল, যিনি সবার চেয়ে আলাদা। উনার ক্লাসে পড়াশোনা থেকে ছুটি পাই না কখনোই।
উনি বলেন- একজন শিক্ষকের সবচেয়ে বড় গিফট যখন তিনি এমনভাবে পড়াবেন, আর প্রতিটা ছাত্র ও ছাত্রী সেই পড়া বুঝতে পারবে। একজন শিক্ষকের সবচেয়ে বড় গিফট যখন তাঁর ছাত্র ছাত্রীরা ভাল রেজাল্ট করে ভাল চাকরী পাবে।
এইরকম এক দুটো আলাদা শিক্ষক পেলে জীবন ধন্য মনে হয়। ওই শিক্ষকের জন্য অনেক মানুষের জীবন বদলে গেছে। লাস্ট বেঞ্চে বসা ছেলেটা আজ ফার্স্ট বেঞ্চে বসে সবচেয়ে ভাল রেজাল্ট করছে।
আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি এমন শিক্ষক পেয়ে। শিক্ষকেরা যেন জীবনের ভীত কে মজবুত করে তোলে। বাবা মা অবশ্যই প্রথম শিক্ষক, কিন্তু তা সত্ত্বেও যৌবনের প্রধান গার্জিয়ান এই শিক্ষকরাই কিন্তু।
শিক্ষক দিবসের দিনে জীবনের সমস্ত শিক্ষকদের মনে পড়ে। অনেক শিক্ষকদের সাথে এখন আর সেইভাবে যোগাযোগ নেই ঠিকই, কিন্তু মনের মধ্যে সকল শিক্ষকেই জায়গা করে নিয়েছেন। সেই ছোটবেলার ছবি আঁকা শেখার স্যার, টিউশেন এর সকল স্যার, স্কুলের সমস্ত স্যারদের আমি প্রনাম জানাই। আমার জীবনে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য।
উপসংহার– আমাদের জীবনে শিক্ষক হিসেবে দেওয়া একটি উপহার রয়েছে যা অমূল্য। এই শিক্ষক দিবসে আমরা তাদের জন্য কিছু করে তাদের প্রতি আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং সমর্থন প্রদান করতে পারি।
শিক্ষক দিবস আমাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার একটি সুযোগ, তাদের উপকারিতা এবং দান প্রতি আমাদের আবেগ জাগানোর একটি মাধ্যম।
আরও দেখুন- একুশে ফেব্রুয়ারি পিকচার ২০২৪
শিক্ষক দিবস নিয়ে স্ট্যাটাস
যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষক দিবস উপলক্ষে স্ট্যাটাস বা উক্তি অথবা ছন্দমালা প্রকাশ করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে আলোচনার এই পর্যায়ে আমরা ছোট ছোট কয়েকটি স্ট্যাটাস সংযুক্ত করছি। যেগুলো আপনি চাইলে জাতীয় শিক্ষক দিবসের দিনে শেয়ার করতে পারেন।
১.”সত্যিকারের শিক্ষক তাঁরাই, যাঁরা আমাদের ভাবতে সাহায্য করেন।“- সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ
২.”একজন শিক্ষক সামগ্রিকভাবে প্রভাব ফেলে, কেউ বলতে পারে না তার প্রভাব কোথায় গিয়ে শেষ হয়। ” – হেনরি এডামস
৩.”মাঝারি মানের শিক্ষক বলেন, ভাল শিক্ষক বুঝিয়ে দেন, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক করে দেখান। মহান শিক্ষক অনুপ্রাণিত করেন। ” – উইলয়াম আর্থার ওয়ার্ড
৪.’শিক্ষক হলেন পরিচালক ও নির্দেশক। তিনি নৌকাটি চালিয়ে যান, কিন্তু চালিকাশক্তির উৎস হল শিক্ষার্থী।‘- জন ডিউই
৫.”আমাদের মনে রাখতে হবে: একটি বই, একটি কলম, একটি শিশু এবং একজন শিক্ষক বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে।” – মালালা ইউসুফজাই
৬.”যদি কোন দেশ দুর্নীতিমুক্ত হয় এবং সবার মধ্যে সুন্দর মনের মানসিকতা গড়ে ওঠে, আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করি সেখানকার সামাজিক জীবনে তিন রকম মানুষ থাকবে, যারা পরিবর্তন আনতে পারেন। তারা হলেন পিতা, মাতা ও শিক্ষক।”-এ. পি. জে. আবদুল কালাম
৭.”শিক্ষকগণ, আমি বিশ্বাস করি, সমাজের সর্বাধিক দায়িত্বশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলেন আপনারা। কারণ আপনাদের পেশাদার প্রচেষ্টা পৃথিবীর ভাগ্যকে প্রভাবিত করে।“
জাতীয় শিক্ষক দিবস সম্পর্কিত বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
১. জাতীয় শিক্ষক দিবস কবে পালিত হয়?
✓ ৫ অক্টোবর
২. জাতীয় শিক্ষক দিবস কবে?
✓ প্রত্যেক বছর অক্টোবরের পাঁচ তারিখ হচ্ছে জাতীয় শিক্ষক দিবস।
৩. জাতীয় শিক্ষক দিবস ২০২৩
✓ জাতীয় শিক্ষক দিবস ২০২৩ ইতিমধ্যে উদযাপিত হয়েছে। সম্প্রতি নতুন বছরে পা রেখেছে আমরা আর তাই অক্টোবরের পাঁচ তারিখ পুনরায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জাতীয় শিক্ষক দিবস।
৪. জাতীয় শিক্ষক দিবস কখন কখন সংঘটিত হয়?
✓ প্রতিবছর নির্দিষ্ট তারিখে জাতীয় শিক্ষক দিবস সংঘটিত হয়।
আরও দেখুনঃ